কিচেনের প্রতিটি কোণেই ঝুঁকি—আপনি প্রস্তুত তো ?

কিচেনের প্রতিটি কোণেই ঝুঁকি—আপনি প্রস্তুত তো ?

কিচেনে কাজ করার সময় কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, সেটা আমি খুব ভালো করেই শিখেছি।

একবার এক বন্ধুর রেস্টুরেন্টে কাজ করছিলাম, খুব ভিড়, অর্ডার আসছে একটার পর একটা। হাতে ভোঁতা ছুরি, আমি ভাবলাম, “চলেই তো যাচ্ছে, ধার দেওয়ার সময় কোথায়?” ফল কাটতে গিয়ে এমনভাবে হাত ফসকালো যে প্রায় আঙুলটাই কেটে যাচ্ছিল। তখনই বুঝলাম—ভোঁতা ছুরিই আসল বিপদ।

আবার একদিন, রাতে ক্লোজিং টাইমে সবাই তাড়াহুড়া করছে। একজন পানি ফেলে দিয়েছিল মেঝেতে, কেউ খেয়াল করেনি। আরেকজন স্লিপ করে পড়ে গিয়ে গরম কড়াইতে হাত দিয়ে ফেললো। শুধু একটু পানি মুছতে আলসেমি করায় তার কয়েক সপ্তাহ কিচেনের বাইরে থাকতে হলো।
আর গরম তেলের ব্যাপার? একবার তেল ছিটকে আমার হাতে পড়েছিল, ছোট্ট একটা দাগ এখনও রয়ে গেছে। তখন বুঝেছিলাম, গরম তেল কখনোই হেলাফেলা করার জিনিস না।
কিচেনে ইলেকট্রিক জিনিসও কম না—মিক্সার, ব্লেন্ডার, ওভেন। সেদিন ব্লেন্ডার চালাচ্ছিলাম, হঠাৎ দেখলাম তারটা ভিজে আছে। যদি আমি অন করে ফেলতাম, কি হতে পারতো কল্পনা করলেই ভয় লাগে।
সবচেয়ে বড় শিক্ষা পেয়েছিলাম যেদিন ছোট্ট এক জুনিয়র শেফ হাত কেটে ফেললো, অথচ আমাদের কাছে কোনো ফার্স্ট এইড কিট ছিল না। তখন হাহাকার করে সবাই চারদিকে দৌড়াচ্ছিল। এরপর থেকে আমি নিজের শিফটে সবসময় ব্যান্ডেজ আর অ্যান্টিসেপটিক কাছে রাখি।
আমরা অনেক সময় ভাবি কিচেন মানেই শুধু রান্না, অথচ কিচেন মানেই রিস্কও। আগুন, ধারালো জিনিস, গরম তেল, ইলেকট্রিক মেশিন—সব একসাথে একটা জায়গায়।
তাই সেফটি মেনে চলা কোনো বাড়তি কাজ না, এটা বেঁচে থাকার নিয়ম।
আজও যখন নতুন কাউকে দেখি ছুরি ভোঁতা দিয়ে কাটতে, বা মেঝেতে পানি ফেলে রেখে দিতে, তখন মনে হয়—যদি ওরা জানতো আমি কীভাবে শিখেছি এই ছোট ছোট জিনিসের গুরুত্ব।



Chef Jahed

https://web.facebook.com/ChefJahed.bd

Post a Comment

Previous Post Next Post