Art on a Plate: প্লেটিংয়ের গল্প

Art on a Plate: প্লেটিংয়ের গল্প

রান্না ভালো করলেই শেফ হয়ে যায় না—খাবারকে সুন্দর করে পরিবেশন করার ক্ষমতাও লাগে। অনেকেই ভাবে প্লেটিং মানে শুধু প্লেটে সাজানো, কিন্তু আসলে এটা একটা আর্ট। খাওয়ার আগে মানুষ চোখে খায়, তারপর মুখে। আর যদি প্রথম দেখাতেই খাবারের প্রেমে পড়ে যায় কাস্টমার, তাহলে অর্ধেক কাজ সেখানেই হয়ে গেল।

আমাদের দেশে একটা বড় সমস্যা—খাবার সুপার টেস্টি হয়, কিন্তু দেখতেও সুন্দর না। ধরা যাক, দুইজন শেফ একই রেসিপি রান্না করলো, টেস্ট একদম এক। একজন এলোমেলোভাবে প্লেটে দিলো, আরেকজন সুন্দরভাবে রঙ, ব্যালান্স, ফাঁকা জায়গা মাথায় রেখে সাজালো। তুমি কি ভাবো, কাস্টমার কোনটার ছবি তুলে ফেসবুকে দেবে?
প্লেটিং আসলে ফুড প্রেজেন্টেশনের সায়েন্স আর আর্টের মিশ্রণ। এখানে রঙের কম্বিনেশন, সিমেট্রি, টেক্সচার, কনসেপ্ট—সব একসাথে আসে। হোয়াইট প্লেটে উজ্জ্বল সবজি বা গার্নিশ খাবারকে চোখে ধরা দেয়ার মতো করে তুলে ধরে। আবার, বেশি ভর্তি করে দিলে খাবার চাপা পড়ে যায়, তাই নেগেটিভ স্পেস বা ফাঁকা জায়গা রাখা লাগে।
কিছু বেসিক নীতি থাকছে—
প্রথমত, প্লেট পরিষ্কার রাখতে হবে। সস বা গ্রেভি ছড়িয়ে গেলে সার্ভ করার আগে মুছে ফেলো।
দ্বিতীয়ত, কালারের ব্যালান্স—একই রঙের খাবারগুলো একসাথে দিলে একঘেয়ে লাগে। কন্ট্রাস্ট তৈরি করো, যেমন সবুজ লিফস, লাল টমেটো, হলুদ সস।
তৃতীয়ত, হাইট—সবসময় ফ্ল্যাট না রেখে কিছুটা লেয়ার বানালে খাবার দেখতে ইন্টারেস্টিং হয়।
চতুর্থত, টেক্সচার মিক্স—ক্রাঞ্চি, সফট, ক্রিমি—একই প্লেটে আলাদা আলাদা টেক্সচার থাকলে খাওয়ার অভিজ্ঞতা বাড়ে।
পঞ্চমত, ফোকাল পয়েন্ট—একটা ডিশে চোখ সবার আগে কোথায় যাবে সেটা ঠিক করো, তারপর বাকি উপাদানগুলো সেটার চারপাশে সাজাও।
অনেক দেশে ফাইন ডাইনিং-এ প্লেটিং শিখতে আলাদা কোর্স হয়। আমাদের দেশে এটা তেমন গুরুত্ব পায় না, কিন্তু ইউটিউব বা ইনস্টাগ্রামে টপ শেফদের প্রেজেন্টেশন দেখে শিখে নেওয়া যায়। প্রথমে নকল করো, তারপর নিজের স্টাইল বানাও।
শেষ কথা—খাবারের স্বাদ মুখে গিয়ে বোঝা যায়, কিন্তু খাবারের সৌন্দর্য চোখে গিয়ে বোঝে। আর কাস্টমারের চোখ জিতে নিতে পারলে, তার মনও জিতে নেবে সহজেই।



Chef Jahed

https://web.facebook.com/ChefJahed.bd

Post a Comment

Previous Post Next Post